Monday 23 September 2019

সম্পাদক মহাশয়ের প্রতিবেদন Sukdepur S. C. High School Magazine "Uttaran" part-1 Year-2006

সম্পাদকীয়_
           
সম্পাদক মহাশয়ের প্রতিবেদন Sukdepur S. C. High School Magazine "Uttaran" part-1 Year-2006, Uttaran part-1,2006
Sukdevpur S. C. High School


             


"জাগিয়া উঠেছে প্রাণ

ওরে উথলি উঠেছে বারি,ওরে প্রাণের বাসনা প্রাণের আবেগ রুধিয়া রাখিতে নারী"। __ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

কৈশোর ও যৌবনের প্রথম প্রভাতে একদিন স্বপ্নভঙ্গ হয় নির্ঝরের। তরুনের হৃদয়ে সেদিন অদম্য উচ্ছ্বাস, আবেগ প্রকাশের জন্য মাথা কুটে মরে। কৈশোরের উন্মেষ লগ্ন স্কুলে অধ্যয়ন কালেই সমাগত হল। 'বাহিরিতে চায়, দেখিতে না পায় কোথায় কারার দ্বার।' কিন্তু ভাবাবেগ প্রকাশের সেই বহু-সম্ভাবনাময় স্বর্ণাদ্বার।



প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যেই তার নিজস্ব কিছু বক্তব্য আছে। সে তা অন্যকে জানাতে চায়, শোনাতে চায় তার অন্তরের রুদ্ধ আবেগ। নতুন নতুন বিষয় অধ্যয়নের ফলে বহু কথা তার হৃদয়ে সঞ্চিত হয়ে ওঠে। এই সব চিন্তা-ভাবনাকে সে বিদ্যালয় প্রত্রিকার পাতায় মুক্তি দেবে এবং তার প্রতি সকলের দৃষ্টি ও মনোযোগ আকর্ষণ করবে। বিভিন্ন ভাবাবেগ প্রকাশের তাগিদে কেউ লিখবে কবিতা, কেউ লিখবে প্রবন্ধ, কেউ লিখবে গল্প, কেউ লিখবে ব্যঙ্গ-কবিতা বা রঙ্গ প্রবন্ধ, কেউ লিখবে বিচিত্র ভ্রমণ কাহিনীর প্রাকৃতিক দৃশ্য কিংবা কোন হারিয়ে যাওয়া বিষন্ন মুখ। এই সব বিভিন্ন প্রকাশোন্মুখ প্রতিভার অবদানকে বিদ্যালয়-প্রত্রিকার সোনার তরীটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠবে। সেই মহৎ উদ্দেশ্যেই বহুকাঙ্খিত আমাদের বিদ্যালয় প্রত্রিকা 'উত্তরণ' প্রকাশের তাগিদ অনুভব করছি।



আমাদের বিদ্যালয়টি সুদূর গ্রামাঞ্চালে অবস্থিত। অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীই নিম্নবিত্ত কৃষক-পরিবারের প্রথম পড়ুয়া। তাই অনেকে মনে করেন, ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পাঠ্য বিষয়ই ভাল করে পড়তে লিখতে পারে না, তারা কি বিদ্যালয় পত্রিকার জন্য উপযুক্ত লেখা লিখতে পারবে ? তবে নিজেদের ভাব ভাবনাকে ছাত্র-ছাত্রীরা ভাষায় রূপ দিতে পারবে না- এই রকম চিন্তা করা উচিত হবে না। কোন রচনা যদি স্বতঃ উৎসারিত হয়, তবে তার মতো মধুর সাহিত্য সৌন্দর্য। কিশোর ছাত্র-ছাত্রীদের সৃষ্টি-শক্তিকে যদি গঠনমূলক কাজে প্রবাহিত করা যায়, তাদের পড়ার প্রতি অনুরাগ বৃদ্ধি পাশ। ভাষা ঞ্জান এই সহজ পরিবেশে আপনি বৃদ্ধি পায়। আজকের ছাত্র আগামী কালের নাগরিক। তাদের মধ্যে আগামী কালের সাহিত্যিক, কবি, বিজ্ঞনী, শিল্পী, দার্শনিক, রাষ্ট্রনেতা সবাই রয়েছে। সেদিক দিয়ে বিদ্যালয় পত্রিকা যেন নবীন প্রতিভা প্রকাশের মাধ্যম যা ভাবী কালের কবি-সাহিত্যিকদের কল-কাকলি-মুখরিত বৈঠকখানা।



প্রতিবছর বিদ্যালয় পত্রিকা প্রকাশ করতে পারলে ভাল হয়। কিন্তু অর্থাভাব ও অন্যান্য কারণে তা সম্ভব না। তবে দেওয়াল পত্রিকা সেই অভাব পূরণ করতে পারে। দেওয়াল পত্রিকায় ভাল লেখাগুলি সংগ্রহ করে দুই তিন বছর পরে বিদ্যালয় পত্রিকা প্রকাশ করা যেতে পারে। ইহাতে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায় ও প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করে।



এই বারই প্রথম আমাদের বিদ্যালয় পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে। অভিজ্ঞতার অভাবে ভুলত্রুটি কিছু কিছু থাকতে পারে। তার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।



কৃতজ্ঞতা স্বীকার পর্বে বলা যেতে পারে_ প্রধান শিক্ষকের অনুপ্রেরণা ও পরামর্শ ব্যতিরেকে পত্রিকা প্রকাশ সম্ভব হত না। অন্যদিকে বিপ্লব কুমার বর্মন, সন্তু সরকার ও অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে ত্রুটির পরিমাণ যতটা সম্ভব এড়ানো গেছে। শেষে পত্রিকাটি ছাত্র-ছাত্রী ও অন্যান্যদের কাছে উপযুক্ত হলে পরিশ্রম সার্থক হল বলা যেতে পারে।


                                   রমাকান্ত রায়
                                      সম্পাদক 
             সুকদেবপুর এস. সি. উচ্চ বিদ্যালয় পত্রিকা। 

No comments:

Post a Comment