Saturday 21 September 2019

Sukdevpur S. C. High School Magazine "Uttaran" Part-1, Year2006

              বিদ্যালয় সম্পাদকের প্রতিবেদন


Sukdevpur SC High School Magazine "Uttaran" Part-1, Year2006। Bengali Magazine
Sukdevpur S. C. High School
"Uttaran"
Part-1, 2006

      যে স্কুল থেকে শিক্ষালাভ করেছি, যে স্কুলের শিক্ষকদের স্নেহ, ভালবাসা আর মায়া মমতায় শৈশব থেকে কৈশোর অতিবাহিত করে আজ অভিভাবক হিসেবে সেই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পদক মনোনীত হয়ে কাজকর্ম সামলাচ্ছি তার প্রতিবেদন লিখতে গেলে অন্য রকম একটা অনুভূতির সৃষ্টি হয়। যেটা অন্য কোন পদমর্য্যাদা লাভের চাইতে আলাদা। এ এক স্বতন্ত্র অনুভূতি। বিবেক, মনুসষ্যত্বের, চেতনাশীল মানুষ, দরদী অভিভাবক, দক্ষ প্রশাসক, গ্রহণযোগ্য প্রতিনিধি, উন্নয়ন কর্মী উলটে-পালটে একজন নিটোল সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চরিত্র চিত্রন বড়ই কষ্টকর, যন্ত্রনাদায়ক। ভাল করা, ভাল ভাবা, ভাল হওয়া মুখে বলা যত সহজ নিজের চরিত্রের মধ্যে, কাজকর্মের মধ্যে তার অনুরণন ঘটানো বেশ কঠিন। কখনো মনে হয় "এ বড়ো বিরক্তি কর"।আবার শিক্ষা আন্দোলনের কর্মী, উন্নয়নকামী মানুষ হিসেবে এ দায়িত্ব সুখকর। মানুষের অর্থ, সম্পত্তি থেকে শুরু করে পার্থিব সম্পদ যা কিছু তা ক্ষণস্থায়ী। একমাত্র উন্নত চেতনাবোধই বোধ হয় মানুষের সবচেয়ে বড় কীর্তি। তাই শিক্ষাঅঙ্গন মন্দির মসজিদ বা কোন ধর্মীয় স্থানেরও উর্দ্ধে। চেষ্টা করেছি একজন সচেতন মানুষ হিসেবে বিদ্যালয় অঙ্গনে প্রবেশ করতে। একজন শিক্ষা আন্দোলনের সামান্য কর্মী হিসেবে নিজেকে বিদ্যালয়ের কাজে যুক্ত করতে। ছাত্র - ছাত্রীদের সুবিধে হল, বিদ্যালয়ের মনোন্নয়ন ঘটে তা লক্ষ্য রাখতে, সবটা পারিনি। হয়তো আরো ভালো করা যেত। তবে সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ চাই। একটি তপশীল জাতি উপজাতি অধ্যুষিত এলাকার, আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া এলাকার বিদ্যালয়কে আরো সুন্দর করে গড়়ে তুলতে যে ত্যাগ, যে শ্রম যে নিষ্ঠা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা থাকা দরকার তা আমার আছে কি ? নিজেকে প্রশ্ন করেছি ? না, ততটা সম্ভব হয়নি। আর শুধু পরিচালক মন্ডলী না, বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষক শিক্ষিকা কর্মীদেরও ভাবতে হবে বিদ্যালয়ের উন্নতির কথা। শুধু নিজের রুজি রোজগার কে বড় করে না দেখে ভাবতে হবে এই অসহায় মানুষ আর প্রথম প্রজন্মের পরুয়াদের কথা। যে ছেলে-মেয়েদের বাবা-মায়েরা আজ স্বপ্ন দেখতে শিখেছে ওর ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া শিখবে, মানুষের মতো মানুষ হবে। আমরা সকলে কি পারিনা একযোগে, একত্রে, সবাই একই সুরে, অবশ্যই পারি। তবে আর দেরি নয়, আসুন সকলে একবার, অন্ততঃ একটি বার চেষ্টা করি আমাদের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সুন্দর করে, আরো সুন্দর করে গড়ে তুলতে। গ্রামের কুঁড়ে ঘরেও জ্বলবে, ঠিকরে পড়বে আলো। আর স্বল্পশিক্ষিত ও নিরক্ষর মানুষ গুলো গর্ব করে বলবে 'আমার আঁধার ঘরে যে আলো আজ ঠিকরে পড়েছে তার কৃতিত্ব ওই মাষ্টার মশাইদের'। এ সম্মান, এ মর্য্যাদা আর অন্য কোন পেশায় নেই, থাকতে পারে না। থাকবেও না।


                          ______________________________
                                বিদ্যালয় সম্পাদক (2006)

2 comments: